রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো | জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থা বর্ণনা করো

    দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে যে সকল প্রশ্ন গুলি পরীক্ষাতে আসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেই সকল প্রশ্ন গুলির উত্তর এখানে যথা যথ ভাবে আলোচনা করা হলো। এখানে আমরা পর পর উত্তর গুলিকে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এখানে রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো বা জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থা বর্ণনা করো, এই প্রশ্নটির উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।




রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো।
 জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থা বর্ণনা করো।

     ভারতবর্ষের সংকটময় অবস্থাতে মোকাবিলা করার জন্য ভারতীয় সংবিধানে ভারতীয় রাষ্ট্রপতিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ব্যাপারে বিশদ ও ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে তিন ধরনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা দিয়েছে। সেগুলি হল,যথা —


(১) 352 নং ধারায় জাতীয় জরুরি অবস্থা :-   ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী বর্তমানে দুটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি 352 নং ধারা অনুসারে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে। যেমন— (i) সংগঠিত বহিরাক্রমণ বা যুদ্ধ ও (ii) অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সংগঠিত সশস্ত্র বিদ্রোহ

রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা
রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা


কার্যকর পদ্ধতি :-  1978 সালের 44 তম সংবিধান সংশোধনী আইন অনুসারে জাতীয় জরুরি অবস্থাকে কার্যকর করতে গেলে সংসদের উভয় কক্ষে পৃথকভাবে ঘোষনাটিকে অনুমোদিত হতে হবে। এর জন্য প্রত্যেক কক্ষে সদস্যের অর্ধেক এবং উপস্থিত ভোটদানকারী সদস্যের এক-তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে। এই জরুরি অবস্থা 1962 ,1971 ,1975 সালে তিন তিনবার ঘোষিত হয়েছে।




(২) 356 নং ধারায় রাজ্যে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা জনিত জরুরি অবস্থা :-   ভারতীয় সংবিধানের 356 নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি যদি কোন রাজ্যের রাজ্যপাল অথবা অন্য কোন সূত্র থেকে প্রাপ্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা সংবিধানের বিধান অনুযায়ী পরিচালনা করা হচ্ছে না, তাহলে তিনি সেই রাজ্যের শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা জনিত জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন এবং সেই রাজ্যের শাসন ক্ষমতা তখন রাষ্ট্রপতির হাতে চলে আসে।

   এই রাজ্যভিত্তিক জরুরি অবস্থা ঘোষিত হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সংসদের উভয়কক্ষ কর্তিক পৃথকভাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত হতে হয়। অনুমোদিত হলে সেটি ছয় মাসের জন্য এবং পুনরায় অনুমোদিত হলে সেটি আরও ছয় মাসের জন্য অর্থাৎ সর্বমোট 1 বছরের জন্য বলবৎ থাকবে। এই জরুরি অবস্থা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন বার ঘোষিত হয়েছে।




(৩) 360 নং ধারায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা :-   ভারতীয় সংবিধানের 360 নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে দেশে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে যে তার ফলে গোটা দেশ বা তার কোন অংশে আর্থিক সংকট বা সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে,তাহলে তিনি সর্বভারতে আর্থিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন।

কার্যকর পদ্ধতি :-  আর্থিক জরুরি অবস্থা ঘোষনাটিকে দুই মাসের মধ্যে সংসদের উভয় কক্ষে অনুমোদিত হতে হয় এবং তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবৎ থাকে। তবে এই ধরনের জরুরি অবস্থা এখনো পর্যন্ত ঘোষিত হয়নি।




মূল্যায়ন :-   সুতরাং,আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ভারতীয় সংবিধানে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তিন ধরনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে সমগ্র ভারতবর্ষে কেন্দ্রের সর্বময় প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা হয় এবং ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা যেন এককেন্দ্রিক ব্যবস্থায় পরিণত হয়।

     তাছাড়া জরুরি অবস্থার সময় সংবাদপত্র, রাজনৈতিক আন্দোলন,নাগরিকদের অধিকার প্রভৃতির ওপর স্বৈরতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হয়।



     শুধু তাই নয় রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে রাজ্যের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা সরকারকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়।

     আবার রাজনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে কেন্দ্রীয় সরকার অবাধে রাজ্যের অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

     রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা এই সমস্ত সমালোচনা ও ফলাফলের সম্মুখীন হয়ে থাকে।




Political Science Question & Answere

দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বিষয়ের অন্য সকল প্রশ্ন ও উত্তর : 



Comments

Popular posts from this blog

চর্যাপদ প্রশ্ন উত্তর - বাংলা সাজেশন - বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে চর্যাপদ - pdf

Learning, শিখন। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞানের প্রথম পার্ট।

রবীন্দ্রনাথের কর্তার ভূত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন