ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার সংঘাতের কারণ আলোচনা | পলাশীর যুদ্ধের কারণ আলোচনা করো

  দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বিষয় থেকে যেসকল প্রশ্নগুলি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এখানে সেই সকল প্রশ্ন নিয়ে নোট আকারে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণীর অন্যান্য বিষয়ের সকল নোট এখানে আলোচনা করা হয়। 

   ইতিহাস বিষয় থেকে পরপর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আলোচনা করা হলো যেখানে এই পোস্টটি তে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার সংঘাতের কারণ , প্রশ্নের বিষয়টিকে এখানে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হলো। 




ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার সংঘাতের কারণ আলোচনা করো।
অথবা,পলাশীর যুদ্ধের কারণ আলোচনা করো।



ভূমিকা :-   নবাব আলীবর্দী খাঁ -এর কোন পুত্র সন্তান ছিল না এই কারণে তিনি তার কনিষ্ঠ কন্যা আমিনা বেগম এর পুত্র 23 বছরের যুবক সিরাজউদ্দৌলাকে(1756 - 1757) তার উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেন। সিরাজ সিংহাসনে বসায় তার আত্মীয় ঘষেটি বেগম ও সৈকত জঙ্গও মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেননি এবং তারা সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে এমনকি ঢাকার দেওয়ান রাজবল্লভও সেই ষড়যন্ত্রে যোগদেন।

কারণ :-   সিরাজের 15 মাসের রাজত্বকালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সংঘাতের যে সমস্ত কারণ গুলি ছিল সেগুলি হল যথা —



সিরাজের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন :-   সিরাজ সিংহাসন আরোহন করলে ওলন্দাজ ফরাসি বণিকরা এবং বাংলার জমিদাররা সিরাজকে উপঢৌকন পাঠিয়ে সম্মানিত করে। কিন্তু ইংরেজরা চিরাচরিত প্রথা উপেক্ষা করে সিরাজকে কোনো উপঢৌকন পাঠায়নি তাই সিরাজ অপমানিত বোধ করেন।



ঘষেটি বেগম ও সৈকত জঙ্গকে ইংরেজ সাহায্য :-   সিরাজের কাছে সংবাদ পৌঁছায় যে ইংরেজরা সিরাজের বিরুদ্ধে ঘষেটি বেগম ও সৈকত জঙ্গকে সাহায্য করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাই সিরাজ ক্রুদ্ধ হন।

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার সংঘাতের কারণ আলোচনা
পলাশীর যুদ্ধের কারণ


কৃষ্ণ দাসকে আশ্রয়দান :-   রাজবল্লভ এর পুত্র কৃষ্ণ দাস ছিলেন নবাব সিরাজের শত্রু কারণ কৃষ্ণদাস প্রচুর ধনরত্নসহ ঢাকা থেকে কলকাতায় পলায়ন করলে ইংরেজ গভর্নর ড্রেক তাকে আশ্রয় দেন। নবাবের বারংবার নির্দেশ সত্ত্বেও ইংরেজরা কৃষ্ণ দাসকে নবাবের হাতে সমর্পণ করতে অস্বীকার করেন।



দুর্গ নির্মাণ :-   দাক্ষিণাত্যে যুদ্ধের অজুহাতে ফরাসি ও ইংরেজ উভয় সিরাজের অনুমতি না নিয়ে বাংলাতে দুর্গ নির্মাণ শুরু করে। সিরাজ দুর্গ নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দিলে ফরাসিরা তা পালন করে কিন্তু ইংরেজরা তার নির্দেশে কোনো কর্ণপাত করেনি এমনকি তারা দূত নারায়ন দাস কে লাঞ্ছিত করে। এর ফলে নবাবের মর্যাদা যথেষ্ট ক্ষুন্ন হয়।



দস্তকের অপব্যবহার :-   ফারুকশিয়ারের ফরমান অনুসারে 1717 খ্রিস্টাব্দে কেবলমাত্র কম্পানিই দস্তক ব্যবহার করে বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার পেয়েছিল। কিন্তু নবাবের আপত্তি সত্ত্বেও কোম্পানির কর্মচারীরা তাদের বাণিজ্যে দস্তক ব্যবহার করে,ফলে নবাব ক্রুদ্ধ হন।



উপসংহার :-   সুতরাং বলতে পারা যায় যে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করার জন্য শুরু করে ষড়যন্ত্র।এই ষড়যন্ত্রের মূল নায়ক ছিল রবার্ট ক্লাইভ ও মীরজাফর। পরিশেষে উভয় সম্পর্কের শেষ পরিণতি হিসেবে ছিল পলাশীর যুদ্ধ। মীরজাফরের চরম বিশ্বাসঘাতকতার নবাব বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হয় ও পরে বন্দি অবস্থায় মীরজাফরের পুত্র মিরনের আদেশে মুর্শিদাবাদে এনে তাকে নিহত করার সাথে সাথে ভারতের ভাগ্য কাছে স্বাধীনতার সূর্য ঘটলো।

দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বিষয়ের অন্য সকল প্রশ্ন ও উত্তর : 






Comments

Popular posts from this blog

সপ্ত প্রবাহের নীতি। মাধ্যমিক কমিশনের সপ্ত প্রবাহের নীতি।

MP 2020 History MCQ suggestions, part 6th,

Four pillars of Education - শিক্ষার চারটি স্তম্ভ | Delors Commission 1997