Attention | Characteristics| Role in Learning, মনোযোগ কি । মনোযোগের বৈশিষ্ট্য লেখ । শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের ভূমিকা লেখ।

মনোযোগ কি । মনোযোগের বৈশিষ্ট্য লেখ । শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের ভূমিকা লেখ। Attention | Characteristics | Role in Learning




        চেতনার অন্যতম লক্ষণ হিসাবে মনোযোগ নামক মানসিক অবস্থা বাকরিয়া দীর্ঘকাল পর্যন্ত পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের একটি আলোচ্য বিষয় হিসাবে স্থান পেয়েছিল। মনোযোগ কে দুই ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় একটি হলো - মনোযোগ আমাদের চেতনার একটি বিশেষ অবস্থা। আরেকটি সম্পর্কে বললে মনোযোগের প্রাথমিক সংজ্ঞাটি বোঝা যাবে মনোযোগ হলো এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে একটি মাত্র নির্বাচিত উদ্দীপকে চেতনার কেন্দ্রে নিয়ে আসা যায়। 

        এই দুটিকে একসঙ্গে বললে প্রকৃত মনোযোগ সম্পর্কে যে ধারণা পাওয়া যায় তা হল যে - মনোযোগ একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যার সাহায্যে কোন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ বিষয়কে মনের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে আসা যায়। 

Attention role in education

     মনোযোগের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য :

        মনোযোগ সম্পর্কে আলোচনা করলে এর কিছু নির্দিষ্ট ধর্ম আমাদের চোখে পড়ে সেগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো  -

  • মনোযোগের বিচলন:  মনোবিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রথম থেকেই মনোযোগ এর চেয়ে ধর্মটি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল তাহলো মনোযোগের বিচলন কারণ মনোযোগ এর গভীরতা সবসময় একরকম থাকে না তা কখনো বাড়ে বা কখনো কমে। কোন একটি বিষয়ে আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রে স্থায়ীভাবে থাকতে পারে না তা কখনো সরে গিয়ে অন্য কোন বস্তু বা বিষয় কে স্থান করে দেয়, এই ঘটনাকে মনোযোগের বিচলন বলা হয়।
  • মনোযোগের বিদলন:  মনোযোগের যদি দুই বা তার বেশি উদ্দীপকের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আসা-যাওয়া ঘটে তবে তাকে মনোযোগের বিচলন বলা হয়। মনোযোগের বিচলন ঐচ্ছিক এবং অনৈচ্ছিক দু'ভাবে হতে পারে। যাদের মনোযোগ হীনতার সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে মনোযোগের বিচলন খুব ঘনঘন ঘটতে দেখা যায়।
  • মনোযোগের নির্বাচন ধর্মীতা:  মনোযোগের প্রাথমিক ধারণা এ বার বর বলা হয়েছে নির্বাচিত উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ নিবদ্ধ হওয়ার কথা অর্থাৎ মনোযোগ নির্বাচন ধর্মী মানসিক প্রক্রিয়া যা অন্য সব উদ্দীপকে বাদ দিয়ে একটি মাত্র উদ্দীপকে চেতনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। অর্থাৎ মনোযোগ নির্বাচন করে নাই কোন বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
  • মনোযোগের বিভাজন ধর্মীতা:  মনোবিজ্ঞানের প্রথম পর্বে মনোযোগ এর বিস্তার একটি অন্যতম চর্চার বিষয় ছিল। মনোযোগ এর বিস্তার সম্বন্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান প্রশ্ন ছিল মানুষ একসঙ্গে কতগুলি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে পারে? অর্থাৎ এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো যে মনোযোগের বিভাজন সম্ভব কিনা। প্রাথমিকভাবে মনোযোগের বিভাজন সম্ভব নয় বলে মনে হয় কিন্তু তা বিভাজিত হলেও স্বল্পমাত্রায় সম্ভব হয়।।







শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের ভূমিকা


           মনোযোগের সঙ্গে শিক্ষক শিখন ব্যবস্থা পুরোপুরি জড়িত কারণ মনোযোগী না হলে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয় শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে চলে যাবে। অর্থাৎ শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে এগুলি হল - 

  1. শিক্ষকরা মনোযোগ আকর্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে উদ্দীপক নির্বাচনের নীতিগুলি প্রয়োগ করবেন। যেমন বৈপরীত্য বৈষম্য আকস্মিকতা অপ্রত্যাশিত বিষয়ের অবতারণা ইত্যাদি।
  2. একবার মনোযোগ আকৃষ্ট হলে তা চিরস্থায়ী বলে মনে করলে ভুল হবে সুতরাং নতুন বৈচিত্র সৃষ্টি করে আগ্রহ সৃষ্টি করে অথবা বিদ্যাচর্চার বাইরে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক বয়স উপযোগী আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে মনোযোগ ধরে রাখা দরকার।
  3. শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি মনোযোগী না হলে শিখন ব্যবস্থা সম্পন্ন হবে না তাই শিক্ষা ক্ষেত্রে মনোযোগ গুরুত্বপূর্ণ।
  4. শিক্ষার্থীদের মনোযোগ কে সম্পদ হিসেবে দেখলে তাদের সবটা সম্পদ শিক্ষার কাজে ব্যাপৃত রাখলে বা পঠন-পাঠনের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
  5. মনোযোগ সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বৈষম্যের বিষয়ে সচেতন ও তৎপর থাকতে হবে।
  6. যাদের মনোযোগ হীনতা আছে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাময়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

*****  এর পরবর্তী পার্ট দ্বাদশ শ্রেণির জন্য প্রয়োজনীয় নয়, এমনকি মনোযোগের ধর্ম থেকেও ছোট করে নিয়ে পড়তে হবে নির্দিষ্ট নাম্বারের জন্য******


আরো প্রয়োজনীয় সকল প্রশ্ন ও উত্তর







      কয়েকটি মনোযোগের তত্ত্ব ( Theories Of Attention )


         বিভিন্ন শিক্ষাবিদ শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েকটি তত্ত্ব আলোচনা করেছেন। যে সমস্ত তথ্য গুলোর মূল বিষয় হলো শিক্ষাক্ষেত্রে এই মনোযোগ কি করে বা কিভাবে প্রয়োগ ঘটানো যায়। এরকম বেশ কয়েকটি মনোযোগের তথ্য হলো -

  • প্রাথমিক পরিস্রবণ তত্ত্ব: ( Primary Filtration Theory )

              এই তত্ত্বের সহজ কথা মনোযোগ এর জন্য অপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলি আমাদের চেতনায় প্রবেশ করার আগেই ছাঁকনির মতো আটকে যায়। তার ফলে একটি মাত্র উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ দিতে কোন সমস্যা হয় না। যেমন একটি ফানেলের মুখে যদি কোন গোলক একবার বসে যায় তবে আর কোন বস্তু ওই ফানেলের হলে ঢুকতে পারে না। এই তত্ত্বের জনক ব্রডব্যান্ড। 

        এই তত্ত্বের প্রধান দুর্বলতা এই যে ঐচ্ছিকভাবে কোন উদ্দীপকের প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া সত্ত্বেও অন্য উদ্দীপক কখনো কখনো আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে যেমন খুব মনোযোগ দিয়ে গান শুনতে শুনতে হঠাৎ পিছন থেকে নাম ধরে কেউ ডাকলে আমরা সেদিকে মনোযোগ দিয়ে থাকি। এই দুর্বলতা কিছুটা সংশোধন করা যায় যদি বলা হয় মনোযোগ আকর্ষণ কারি উদ্দীপক অন্য উদ্দীপকের পথ বন্ধ করে দেয় না কিন্তু চেতনায় প্রবেশের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।



  • পরবর্তী পরিস্রাবণ তত্ত্ব: ( Late Filtration Theory )

                নরম্যান ও কয়েকজন মনোবিজ্ঞানীরা পরবর্তীকালে ব্রডব্যান্ডের প্রাথমিক পরিস্রাবণ তত্ত্ব কে কিছুটা পরিমার্জিত করেন।তাদের মতে সংবেদন ইন্দ্রিয়ের প্রান্তিক উদ্দীপনার পরই সমস্ত উদ্দীপকের চেতনায় প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায় না। কিছু সংখ্যক নির্বাচিত উদ্দীপক সম্বন্ধে আমরা যথেষ্ট সচেতন হয়ে তারপর নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি। যেমন শিক্ষক ক্লাস ঢুকে কথা বলতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য শব্দ ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থান ইত্যাদি অনেক উদ্দীপক একযোগে চেতনা থেকে লুপ্ত হয়ে যায় না। সমস্ত বিষয় বিশ্লেষণ করে শিক্ষক কি বলছেন এবং তা কতখানি উপযোগী সে বিবেচনা করে ধীরে ধীরে শিক্ষকের প্রতি মনোযোগী হই। 

              অর্থাৎ এই তথ্য অনেকগুলি মনোযোগী বিষয় যা মনোযোগের কেন্দ্রে আসতে পারেনা এমন কতগুলি বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তা প্রয়োজনের বাইরে স্থান করে নেয় এবং মূল বিষয়টি ধীরে ধীরে মনোযোগের কেন্দ্রে অবস্থান করে।







  • মনোযোগের সম্পদ বন্টন তত্ত্ব: ( resource allocation theory of attention)

               এখানে সম্পদ কথাটির অর্থ মনোযোগ দানের ক্ষমতা এই তত্ত্বের মধ্যে কোন একটি সময়ে প্রত্যেক ব্যক্তির মনোযোগ দানের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। মনোযোগের সীমাবদ্ধ ক্ষমতাকে ভাগ করে একাধিক বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেওয়া সম্ভব অর্থাৎ এই তথ্য মনোযোগের বিভাজন ধর্মী তার ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করে।

         ব্যক্তি প্রাথমিকভাবে যখন কোন নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তখন তার সম্পূর্ণ মনোযোগ নতুন উদ্দীপকের উপর নিবিষ্ট হয় কিন্তু বারবার একই উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ দিতে গিয়ে তখন আর সম্পূর্ণ মনোযোগ না হলেও কোন সমস্যা হয় না, সে কত্রে মনোযোগের বাকি সম্পন্ন করা যায়। যেমন স্বামী বিবেকানন্দ খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোন বই পড়া শেষ করতেন তার এই ক্ষমতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন মনোযোগের অভ্যাস এর উপর জোর দিলে এমন করা যায়, যেমন ছোট শিশু যখন প্রথম পড়া শেখে তখন সে প্রতিটি শব্দের প্রতিটি অক্ষরের প্রতিটি আলাদা আলাদা করে মনোযোগ দেয়।


MOTHER'S DAY BEST WISHES CLICK HERE


Comments

Popular posts from this blog

সপ্ত প্রবাহের নীতি। মাধ্যমিক কমিশনের সপ্ত প্রবাহের নীতি।

MP 2020 History MCQ suggestions, part 6th,

কন্যাশ্রী প্রকল্প প্রজেক্ট | দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষা বিজ্ঞান প্রজেক্ট কন্যাশ্রী প্রকল্প | Kanyashri Prokolpo Project 2024