Four pillars of Education - শিক্ষার চারটি স্তম্ভ | Delors Commission 1997
মানুষের শিখন প্রক্রিয়া জন্মের পর থেকে শুরু হয় এবং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। জীবনের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এ শিক্ষা শেষ হয়। পরিবর্তনশীল সমাজে আমাদের বাঁচতে গেলে সমাজের সঙ্গে সঙ্গতি বিধান অন্যতম লক্ষ্য। এই কারণে শিশুর মধ্যে প্রথম থেকে এক প্রেষণার সঞ্চার করা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে শিশুকে মানুষের মত মানুষ তৈরি করে তোলা যাবে।
এই উদ্দেশ্যে 1999 সালে জ্যাক ডেলর এর নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন বিশ্বব্যাপী পরামর্শ, আলোচনা এবং বিশ্লেষণের ভিত্তিতে 1996 খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এর কাছে "লার্নিং দা ট্রেজার উইদিন" ( learning the treasure within) নামক একটি প্রতিবেদন পেশ করেন।এই প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার চারটি মূল উদ্দেশ্যের ( four pillar of education ) কথা আলোচনা করা হয়েছে সেগুলি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করলাম -
Four pillars of Education - শিক্ষার চারটি স্তম্ভ | Delors Commission 1997
জানার জন্য শিক্ষা / learning to know
শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হল জ্ঞান লাভ করা, জ্ঞান মানুষের মধ্যকার অন্ধকারকে দূর করে, শিক্ষা দ্বারা মানুষের তৃতীয় চক্ষু খুলে যায়, বর্তমানে শিক্ষার ধারায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হয় এবং এই জ্ঞান সঞ্চয়ের অধিকার সকল মানুষের।
জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষ পৃথিবীর সমস্ত রহস্য জানতে পারে মানুষ কিছু জানতে চাই শিখতে চাই আর এই চাহিদা পূরণ করতে পারে একমাত্র শিক্ষা। এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য শিক্ষার্থীর মধ্যকার একাগ্রতা স্মৃতিশক্তি ও চিন্তার বিকাশ করতে হবে এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক পাঠক্রম এর সৃষ্টি করতে হবে।
ফলে ব্যক্তির জীবনে পরিবর্তন সাধিত হবে শিশু যত বড় হবে তার জ্ঞানের পরিধি যত বড় হবে। তাই জানার জন্য শিক্ষা শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
জ্ঞানের মাধ্যমে ব্যক্তির জীবনে আচরণের পরিবর্তন হয়। শিশু যত বড় হবে তার জ্ঞানের পরিধি কত বড় হবে।ছবি আঁকাই তাই ডেলর কমিশনের জ্ঞানের জন্য শিক্ষাকে শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কর্মের জন্য শিক্ষা / learning to do
সুষ্ঠুভাবে ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার ক্ষমতাকে বলা হয় কর্মদক্ষতার শিক্ষা। শিক্ষার এই উদ্দেশ্যটি মূলত বৃত্তিমূলক শিক্ষার সঙ্গে জড়িত। এই ধরনের শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শিক্ষাকে এমন ভাবে কাজে লাগাতে হবে যাতে করে ব্যক্তি ভবিষ্যতে নিজেকে বিভিন্ন ধরনের কাজে দক্ষতার সঙ্গে নিযুক্ত করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
জ্ঞানমূলক শিক্ষাকে প্রকৃতপক্ষে ব্যবহারিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। কোঠারি কমিশনের সমাজের উপযোগী কর্মের জন্য শিক্ষিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে কর্মের জন্য শিক্ষা কে চারটি দিক থেকে বিশ্লেষণ করা হয়।
কর্মের জন্য শিক্ষা কে শারীরিক কর্মশিক্ষা, বৌদ্ধিক কর্মের জন্য শিক্ষা, সামাজিক কর্মের জন্য শিক্ষা এবং নান্দনিক কর্মের জন্য শিক্ষা এই চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আধুনিক শিক্ষায় প্রজেক্ট পদ্ধতি হলো প্রয়োগবাদের একটি বিশেষ অবদান।
শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয় শ্রোতা নয় সে শুনবে শিখবে বুঝবে খেলবে কোন জিনিস তৈরি করবে ব্যবহার করবে এবং তারা জীবনকে বুঝতে শিখবে।
আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থী শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয়তা নয় সে শুনবে বুঝবে খেলবে জিনিস তৈরি করবে এবং ব্যবহার করবে, এবং ব্যবহার করবে।কর্মের জন্য শিক্ষা ব্যক্তিকে সমস্যা সমাধানে কর্মের ধারণা সম্পর্কে মানবসম্পদ উন্নয়নে বৃত্তি নির্বাচনে সহায়তা করে।
একত্রে বসবাসের শিক্ষা / learning to live together
একত্রে বসবাস এই শিক্ষা বলতে বোঝায় পরস্পরের মধ্যে সহনশীলতা ও সহমর্মিতা সৃষ্টির মাধ্যমে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমরা জানি যে মানুষ সমাজবদ্ধ জীব বর্তমান বিশ্বে হিংসা পারস্পরিক বিরোধিতা ইত্যাদি সমাজকে বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
প্রাচীনকালে জীবনযাত্রা সহজ সরল থাকলেও আজকে জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। আজকে ক্ষমতার দম্ভ ও অর্থনৈতিক অসাম্যের প্রতিযোগিতার ফলে মানুষের মধ্যকার মানবিক গুণাবলী।তাই প্রথম থেকেই শিশুর মধ্যে ভালোবাসা সহনশীলতা ভাববিনিময় সহযোগিতা ইত্যাদি গুণের বিকাশ ঘটিয়ে সমাজকে শিশুর বাসযোগ্য করে তুলতে হবে।
আর এর জন্য প্রয়োজন একত্রে বসবাস করার জন্য শিক্ষা এর ফলে সে অন্যদের বুঝতে পারবে অন্যদের কাজে আনন্দ উপভোগ করবে এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে শান্তি আনতে পারবে।
প্রথাগত শিক্ষায় বৌদ্ধিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক গুণাবলি বিকাশের যে ব্যবস্থা করা তাই হলো একত্রে বসবাসের জন্য শিক্ষা।
মানুষ হওয়ার শিক্ষা / learning to be
আধুনিক শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হলো প্রকৃত মানুষ তৈরি করা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কার মানুষের জীবনে আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে। তেমনি কোন জ্ঞানী আর স্থায়ী নয় ফলে জীবনের সমস্যাবলী সমাধান করতে গিয়ে তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এরফলে জীবনযাপনের রীতিনীতির মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সুস্থ জীবন যাপনের জন্য তাদের মধ্যে বিবেক মনুষত্ব নৈতিকতা পারস্পরিক সহযোগিতা প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটাতে হবে। যথাযথ মানবিক মূল্যবোধ গড়ে উঠলে মানুষ নিজেকে সহজে পরিচালিত করতে পারবে।
সুতরাং সে নিজের সমাজের এবং দেশের মঙ্গলের জন্য তৎপর হয়ে উঠবে। সে নিজস্ব চিন্তাভাবনা কে কাজে লাগিয়ে বিচারব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে।প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষায় যে সদ্গুণ শিক্ষার্থীর মধ্যে আনার চেষ্টা করা হয় সেগুলি হল ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটানো স্বাধীন বিচার ক্ষমতা ব্যক্তির সম্ভাবনা প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটানো তার নান্দনিক ক্ষমতা চারিত্রিক উন্নতি সাধিত করা। এই সমস্ত গুণাবলীর বিকাশ ঘটানো মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্য।
- আশা করি এই পর্যন্ত প্রশ্নটিই যারা পড়লে তারা হয়তো বুঝতে পেরেছো যে এই টোটাল বিষয়টি কখনোই একটি প্রশ্নের জন্য লিখতে আসবে না এখান থেকে মাত্র একটি চার নম্বরের প্রশ্ন হতে পারে এবং এই চারটি থেকে যেকোন একটি সম্পর্কে তোমাকে লিখতে হবে।যদি আসে একত্রে বসবাসের শিক্ষা বা কর্মের জন্য শিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করো সে ক্ষেত্রে প্রথম ভূমিকাটুকু লিখে তারপর যেটি লিখতে বলবে সেটাকে লিখতে হবে।
- অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার 10 টি সহজ উপায়।
- একটি মাইক্রো নিস ওয়েবসাইট বানিয়ে মাসে 2000 ডলার ইনকাম।
- মাদারবোর্ড কি? মাদারবোর্ডে আর কি কি থাকে? মাদারবোর্ডের দাম কত।
খুব সুন্দর ।
ReplyDeleteThank You.
Delete