মন্ত্রী মিশন | ক্যাবিনেট মিশন সম্পর্কে আলোচনা করো।
দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বিষয় থেকে যেসকল প্রশ্নগুলি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এখানে সেই সকল প্রশ্ন নিয়ে নোট আকারে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণীর অন্যান্য বিষয়ের সকল নোট এখানে আলোচনা করা হয়।
![]() |
ক্যাবিনেট মিশন |
ইতিহাস বিষয় থেকে পরপর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আলোচনা করা হলো যেখানে এই পোস্টটি তে মন্ত্রী মিশন / ক্যাবিনেট মিশন সম্পর্কে আলোচনা করো।, প্রশ্নের বিষয়টিকে এখানে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হলো।
মন্ত্রী মিশন / ক্যাবিনেট মিশন সম্পর্কে আলোচনা করো।
ভূমিকা :- ভারতবর্ষের স্বাধীনতা প্রাপ্তি কালে রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হলো ক্যাবিনেট মিশনের ভূমিকা। এই মিশনই ভারতের স্বাধীনতা বিষয়ে জটিল রাজনৈতিক প্রশ্ন সমাধান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এই মিশনে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ-আলোচনা করে ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষে নিয়োজিত হয়েছিল। যদিও এই মিশন ভারতের স্বাধীনতা বিষয়ক জটিল রাজনৈতিক প্রশ্ন সমাধানে আশানুরূপ সফল হয়নি। কিন্তু তবুও ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির বর্ণনাটিকে সম্ভব করে তোলার জন্য এই মিশন ভারতীয় স্বাধীনতা ইতিহাসে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
মিশনের আগমন ও কার্যকলাপ :- ক্যাবিনেট মিশন 1946 সালের 24 শে মার্চ তারিখে দিল্লিতে এসে পৌঁছায়। এই মিশনের সদস্য ছিলেন লর্ড পেথিক লরেন্স, স্যার স্টাফোর্ড ক্রিপস ও এ.ভি আলেকজান্ডার। তারা সকলেই ভারতের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতা বিষয়ক রাজনৈতিক বিষয়টি সম্পর্কে কথাবার্তা শুরু করেন। কিন্তু সেই কথাবাত্রা থেকেই ভারতের স্বাধীনতার বিষয়ে কোনো সর্বসাধারণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা গেল না কারণ ভারতের জাতীয় কংগ্রেস অক্ষুন্ন ভারতের স্বাধীনতা চেয়েছিল। কিন্তু মুসলিম লীগ ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবি করেছিল। ভারতীয় নেতাদের মধ্যে ভারতের স্বাধীনতা বিষয়ে মতৈক্য না হয় ক্যাবিনেট মিশন 1946 সালের 26 তারিখে একটি শাসনতন্ত্রের পরিকল্পনা বা স্বাধীনতা বিষয়ক প্রস্তাব পেশ করেন।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব :- ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনায় বর্ণিত প্রস্তাব গুলি হল যথা —
(i) দেশীয় রাজ্যসমূহ ও ব্রিটিশ রাজ্যের প্রদেশগুলোকে নিয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা হবে।
(ii) প্রদেশ গুলিকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেওয়া হবে এবং ভারতীয় প্রদেশগুলোকে ক-খ-গ এই তিন ভাগে ভাগ করা হবে।
(iii) প্রত্যেক বিভাগ নিজের এলাকার জন্য সংবিধান এবং ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়ন করবে এই তিনটি বিভাগে এবং দেশীয় রাজ্যের প্রতিনিধিগণ।
(iv) নতুন সংবিধান অনুযায়ী প্রথম নির্বাচনের পর যে কোন প্রদেশ যে কোন বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্য বিভাগে যোগ দিতে পারে। প্রয়োজন হলে প্রথম দশ বছর পর অথবা প্রতি 10 বছর অন্তর সংবিধান পরিবর্তন করা যাবে।
(v) নতুন সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
মিশনের প্রস্তাব ও সমস্যা :- ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনা অবশ্য সমগ্র গৃহীত হয়নি কারণ এ ব্যাপারে তদানীন্তন ভারতের দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য ছিল। যেমন —
ক্যাবিনেট মিশন মুসলমানদের জন্য পাকিস্তান প্রস্তাব অগ্রাহ্য করলেও এই মিশন কিন্তু মুসলিম লীগের মূল দাবি দাবাকে মেনে নিয়েছিল। কারণ ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে প্রদেশে বিভক্ত করার পরিকল্পনা করে এই মিশন মূলত মিস্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বকে শিকার করে নিয়েছিল। তাই উচ্ছ্বাসিত মুসলিম লীগ মিশনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল।
কংগ্রেস প্রদেশগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করার বিষয়ক মন্ত্রী মিশনের নৈতিক সমর্থন না করলেও ভারতের অক্ষুন্নতা মিশনের প্রস্তাবে স্বীকৃত হওয়ার কারণে এই মিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানও করেননি এবং সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে কংগ্রেস গণ-পরিষদে যোগ দিতে সম্মত হয়।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
এদিকে মিশনের প্রস্তাব মত 1946 সালের দোসরা সেপ্টেম্বর তারিখে কংগ্রেস জহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। মুসলিম লীগ প্রথমে এতে যোগ দিলো না কিন্তু পরে পাকিস্তান গঠনের উপায় হিসাবে এবং সরকারের কাজ-কর্মের অচলাবস্থা সৃষ্টি করার জন্য এই সরকারে যোগ দিলো। তবে লীগ গণপরিষদে যোগদান করল না। কংগ্রেস এবার কঠোর মনোভাবের জানায় গণপরিষদে যোগদান না দিলে অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেওয়ার অধিকার নেই।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
উপসংহার :- সুতরাং বলা যায় যে লীগ ও কংগ্রেসের মধ্যে বিরোধ তীব্রতর হয়ে উঠলে এই বিরোধের উৎস হিসাবে ক্যাবিনেট মিশন তার প্রস্তাবে অনেকটাই সংযত হয়ে রইল। যদিও এর পরেই ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাবে 1947 সালের 14 ই আগস্ট তারিখের গভীর রাতে ভারত বিভাজনের ভিত্তিতে ভারত বর্ষ পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করেছিল।
দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বিষয়ের অন্য সকল প্রশ্ন ও উত্তর :
- পলাশীর যুদ্ধের কারণ আলোচনা করো
- অবশিল্পায়ন কি ? অবশিল্পায়নের ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করো
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সম্পর্কে আলোচনা করো। এর ফলাফল কি ছিল ?
- ভারতের নবজাগরণের রাজা রামমোহন রায়ের অবদান আলোচনা করো।
- ভারতে রেলপথ স্থাপনের উদ্দেশ্য কি ছিল ? ভারতীয় অর্থনীতিতে রেলপথের প্রভাব আলোচনা করো।
- সমাজ সংস্কারক হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো।
- স্যার সৈয়দ আহমেদ ও তার আলীগড় আন্দোলনের বিবরণ দাও
- বাংলার নবজাগরণের প্রকৃতি ও সীমাবদ্ধতা লেখ
- অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি আলোচনা করো
- আইন অমান্য আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও তাৎপর্য আলোচনা করো
- ক্রিপস মিশনের প্রস্তাবগুলি কি ছিল ?এই প্রস্তাব গুলি সম্পর্কে ভারতীয়দের কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল
- নৌ-বিদ্রোহ সম্পর্কে আলোচনা করো।
- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে ভারতের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার বর্ণনা দাও।
- ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন সম্বন্ধে আলোচনা করো।
- জালিয়ান ওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের বিবরণ দাও।
- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নেতাজির আজাদ হিন্দ বাহিনীর অবদান বা ভূমিকা
- মন্ত্রী মিশন / ক্যাবিনেট মিশন সম্পর্কে আলোচনা করো।
Comments
Post a Comment