উডের ডেসপ্যাচ | কলকাতা মেডিকেল কলেজ | মধুসূদন গুপ্ত MP Histor Suggestions 4 mark
Q. উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে কি জানো লেখ।
ভারতীয় শিক্ষানীতি নির্দিষ্ট কোন পাঠক্রম গঠনের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল না। লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এর আমল পর্যন্ত কিছু বেসরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, যদিও তাদের শিক্ষানীতি পরিকল্পিত ছিল না। এইরকম পরিস্থিতিতে বোর্ড অফ কন্ট্রোল সভাপতি চার্লস উড একটি নির্দেশ নামা প্রকাশ করেন। ভারতীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে ১৮৫৪ সালের এই নির্দেশ নামা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত। ভারতীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে উডের ডেসপ্যাচ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ ছিল।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
মহাসনদ :: চার্লস উডের নির্দেশনামা বা ডেসপ্যাচ এর উপর ভিত্তি করে ভারতে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এই শিক্ষা ব্যবস্থার আগে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটা উদ্দেশ্যহীন বলে পরিগণিত হতো। পরবর্তীকালে এই নির্দেশ নামা ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ বলে পরিচিতি পায়।
সুপারিশ :: ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় আধুনিক রীতি বা পাশ্চাত্য রীতি প্রবর্তন করার জন্য চার্লস উড (charles wood) লিপিবদ্ধ করেন তার কয়েকটি সুপারিশ ছিল যেমন -
- দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনমতো আরো প্রাথমিক ইস্কুল মাধ্যমিক ইস্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
- কলকাতা বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
- সমস্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করে নেওয়ার কথা বলা হয় এই নির্দেশ নামায়।
- সমস্ত শিক্ষার একটি মূল বা উচ্চশিক্ষা সর্বোচ্চ পদ হিসাবে ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন চালু করার কথা বলা হয়।
- সাধারণ শিক্ষায় মাতৃভাষার ব্যবহার করতে হবে।
- শিক্ষাব্যবস্থা ধীরে ধীরে উপরের দিকে পৌঁছালে তাতে প্রয়োজনমতো ইংরেজি ভাষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
- সমাজের সমস্ত স্তরের শিক্ষার পাশাপাশি স্ত্রীদের শিক্ষার প্রসারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।
- শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে যুক্তিযুক্ত হয় তার জন্য শিক্ষকদের শিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
style="display:block"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="3191190539"
data-ad-format="link"
data-full-width-responsive="true">
Q. ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার প্রসারে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা আলোচনা করো।
১৮৩৫ সালে বড়লাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করলে ভারতে আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যার পথ চলা শুরু হয়। এই প্রচেষ্টা রাগে ভারতে শুধুমাত্র দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। কলকাতা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসাবিদ্যায় এক নতুন আধুনিকতার ছোঁয়া এল। ভারতীয় আধুনিক চিকিৎসায় কলকাতার কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা গুলি উল্লেখযোগ্য -
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
নতুন যুগ :: চিকিৎসার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ভারতবর্ষে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল। কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রী লাভ করে বহু যুবক দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হলেন। ফলে তাদের মাধ্যমে সেসব স্থানে আধুনিক উন্নত পাশ্চাত্য চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রসার ঘটে। ফলে এ কথা বলা যায় বাংলা তথা ভারতের চিকিৎসা বিদ্যার অগ্রগতিতে এক নতুন যুগের সূচনা হয় এই কলকাতা মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মধ্য দিয়ে।
সরকারি উদ্যোগ :: মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার আগে সরকার দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থায় অর্থ ব্যয় করতেন, কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থায় অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দেয় এবং এই আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় অর্থের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এর ফলে সরকারি উদ্যোগের জন্য ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রভূত উন্নতি লাভ করতে পেরেছিল।
চিকিৎসক :: আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রথম পদক্ষেপ ছিল কলকাতা মেডিকেল কলেজ, এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঙালি ছাত্র দের মধ্যে এক নতুন আশার দানা বাঁধে। অনেক মেধাবী ছাত্ররা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ছাত্র ছিলেন উমাচরণ শেট, রাজকৃষ্ণ দে, দ্বারকানাথ গুপ্ত প্রমূখ।
পাশ্চাত্য চিকিৎসা বিদ্যা :: কলকাতা মেডিকেল কলেজে দেশীয় চিকিৎসা বিদ্যার পরিবর্তে ইউরোপের উন্নত চিকিৎসা বিদ্যা শিক্ষাদান শুরু হয়। পুডুচেরি পর কলকাতা মেডিকেল কলেজ হল এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় কলেজ যেখানে আধুনিক ইউরোপীয় চিকিৎসা বিদ্যা শেখানো হতো। আর এই চিকিৎসা বিজ্ঞানের জয়যাত্রা সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ভারতবর্ষে পাশ্চাত্য চিকিৎসা ব্যবস্থার সূত্রপাত হয়।
উল্লেখযোগ্য চিকিৎসক :: কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে রহিম খান প্রথম মুসলিম ছাত্র হিসাবে ডাক্তারি পাশ করেন। মধুসূদন গুপ্ত সমস্ত ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী এবং উল্লেখযোগ্য নাম হয়ে আছেন। তিনি প্রথম কলকাতা মেডিকেল কলেজে সব ব্যবচ্ছেদ শুরু করেন। এছাড়া অনেক বাঙালি স্বনামধন্য চিকিৎসক এই মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রী লাভ করেছেন।
আরো অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর
style="display:block"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="3191190539"
data-ad-format="link"
data-full-width-responsive="true">
Q. ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা করো।
১৮৩৫ সালে কলকাতায় কলকাতা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ভারতবর্ষের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল। কলকাতাসহ ভারতবর্ষের মেধাবী সম্পন্ন ছাত্ররা এই চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিকে ঝুঁকে পড়ল ও কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করতে লাগল শতশত ছাত্ররা। কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম মধুসূদন গুপ্ত।
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="8200529540">
শব ব্যবচ্ছেদ :: ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে শব ব্যবচ্ছেদ অযৌক্তিক বলে মনে করা হতো। কিন্তু পাশ্চাত্য ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটে। এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভাবে কলকাতা মেডিকেল কলেজে প্রথম মধুসূদন গুপ্ত সব ব্যবচ্ছেদ চালু করেন।
শিক্ষাজীবন :: মধুসূদন গুপ্ত ১৮৪০ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন এবং পরবর্তী সময়ে এই মেডিকেল কলেজ এই তিনি অধ্যাপনার কাজ করেন। ১৮৫২ সালে কলেজের বাংলা ক্লাসের সুপারিনটেনডেন্ট হিসাবে নিযুক্ত হন।
কৃতিত্ব :: মধুসূদন গুপ্ত তার নিজস্ব প্রতিভা এবং জ্ঞান শারীর বিদ্যা নামে একটি বাংলা বই লিখে গেছেন। এমনকি বিভিন্ন ইংরেজি বইয়ের বাংলা অনুবাদ তিনি করেছিলেন শুধুমাত্র বাঙালি ছাত্র দের সুবিধার্থে। " লন্ডন ফার্মোকিয়া" নামে একটি বই তিনি অনুবাদ করেন।
মধুসূদন গুপ্ত এমন একটি নাম যে নামের সঙ্গে সমস্ত ভারতবর্ষের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস লুকিয়ে আছে। যার হাত দিয়ে প্রথম মৃতদেহের ব্যবচ্ছেদ প্রথা চালু হয় এমনকি বহু অজানা জিনিস কে জানার দরজা খুলে যায় তিনি হলেন মধুসূদন গুপ্ত। তিনি অন্ধকার কুসংস্কার আচ্ছন্ন বাংলার প্রথাকে ভেঙে দিয়ে ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
style="display:block"
data-ad-client="ca-pub-2511659517694820"
data-ad-slot="3191190539"
data-ad-format="link"
data-full-width-responsive="true">
Comments
Post a Comment