শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যা ও এই সমস্যা সমাধানে পিতা-মাতা ও শিক্ষকের ভূমিকা আলোচনা করো।

   শ্রেণিকক্ষ এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন পরিবেশের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে অবস্থান করে। এর ফলে শ্রেণিকক্ষে এক ধরনের শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যা দেখা যায়। এই ধরনের আচরণগত সমস্যা শিক্ষকের শিক্ষাদানে এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
শ্রেণিকক্ষের কয়েকটি আচরণগত সমস্যা

     এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবক অর্থাৎ মাতা পিতা এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের যথেষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। 



শ্রেণিকক্ষের কয়েকটি আচরণগত সমস্যা 


১)  বিশেষভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা অনেক সময় বিদ্যালয় কে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। কারণ এক্ষেত্রে এরা মনে করে যে বিদ্যালয়ে হয়তো তাদেরকে যথার্থ ভাবে গুরুত্ব দেয় না। এই কারণে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়কে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করে।

২)  প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করা অন্যান্য স্বাভাবিক শিশুদের কে এড়িয়ে চলতে চাই। কারণ তারা মনে করে যে সমাজ এবং বিদ্যালয় তাদের মূল্য অন্যদের তুলনায় অনেক কম।

৩)  অনেক সময়ই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা হীনমন্যতায় ভোগে, এই হীনমন্যতায় ভোগার কারণে তারা শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন রকম আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি করে। তারা একে অপরের সঙ্গে মিশতে চায় না বা শিক্ষা দানকালে গভীর মনোযোগী হয়ে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয় না।

৪)   প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের আবেগ ও আত্মকেন্দ্রিকতা বেশি থাকে এই কারণে এরা শ্রেণিকক্ষের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখে। এদের নিজের ইচ্ছা আবেগকে সবসময়ই নিজের কাছে রাখতে ভালবাসে।

৫)  কখনো কখনো বন্ধুরা বা শিক্ষক যদি তার এই অন্তর্মুখিতা ছেড়ে বাইরে আনার চেষ্টা করে তখন সে বিভিন্ন ভাবে প্রক্ষোভ সৃষ্টি করে। এমনকি এই প্রক্ষোভের কারণে সে বিদ্যালয় ছাড়তেও দ্বিধাবোধ করে না।





শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার সমাধানে পিতা-মাতা ও শিক্ষকের ভূমিকা


১)  প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা যেহেতু বিদ্যালয় কে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে সেই কারণে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের প্রাথমিক কর্তব্য হবে তাদেরকে বিদ্যালয় মনোযোগী করে তোলা এবং বিদ্যালয় যে আমাদের সমাজের একটি অংশ সেখানে তাদের যথার্থ ভূমিকা আছে একথা তাদের বোঝাতে হবে।


২)  শ্রেণিকক্ষে শিক্ষককে অবশ্যই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেলবন্ধন করে তোলার চেষ্টা করতে হবে। এরফলে প্রতিবন্ধী শিশুরা ওই স্বাভাবিক শিশুর মতো আচরণ করার চেষ্টা করবে ও বিদ্যালয় মনোযোগী হয়ে উঠবে।




৩)  পিতা-মাতা ও শিক্ষকের অন্যতম প্রধান কর্তব্য হবে প্রতিবন্ধী এই সকল শিক্ষার্থীরা যাতে হীনমন্যতায় ভোগে। এদেরকে যদি হীনমন্যতা থেকে বাইরে বের করে আনা যায় তবে তারা অনেক সময় স্বাভাবিক শিশুর মতো আচরণ শুরু করতে পারে।

৪)  যেহেতু প্রতিবন্ধী শিশুরা আবেগ ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকে এই কারণে এই আবেগকে কাজে লাগিয়ে তাদের মধ্যে শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়কে প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক অবশ্যই অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে তা করতে পারে।

৫)  শিক্ষক বা পিতা মাতার কর্তব্য হবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রাক্ষোভিক বিকাশ গুলোকে মনোযোগ সহকারে সমাধান করা। এই সকল শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক কারণে প্রক্ষোভ জড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক ও পিতা মাতার ভূমিকা থাকবে এই প্রক্ষোভ কে কাজে লাগিয়ে তাদের অনান্য বিকাশকে সুন্দর করে গড়ে তোলা।






  





Comments

Popular posts from this blog

সপ্ত প্রবাহের নীতি। মাধ্যমিক কমিশনের সপ্ত প্রবাহের নীতি।

কন্যাশ্রী প্রকল্প প্রজেক্ট | দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষা বিজ্ঞান প্রজেক্ট কন্যাশ্রী প্রকল্প | Kanyashri Prokolpo Project 2024

Four pillars of Education - শিক্ষার চারটি স্তম্ভ | Delors Commission 1997