সমালোচনা সাহিত্য কাকে বলে ? সমালোচনা সাহিত্যের বিভিন্ন রীতি সম্পর্কে আলোচনা করো।

   যেদিন থেকে মানুষ নিজেকে বুঝতে শিখেছে সেদিন থেকেই সমালোচনার জন্ম হয়েছে। সৃষ্টি হলেই তার যেমন বিনাশ আছে তেমনি সৃষ্টি হলে বিনাশের আগে তাকে নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা সম্ভব। আর এই কারনেই বাংলা সাহিত্যে এমনকি বিশ্বের সমস্ত ভাষা ও সাহিত্যে এই সমালোচনা সাহিত্য স্থান বেশ উঁচু দরের। বিশ্বের অন্যান্য ভাষার মতো বাংলা ভাষাতেও এই সমালোচনা সাহিত্যের বেশ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। এখানে সমালোচনা সাহিত্য কাকে বলে এবং তার বিভিন্ন রীতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো -


সমালোচনা সাহিত্য কি ? 

   যে রচনাতে সাহিত্যকে বোঝার তার প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করার ব্যক্তিগত ভালো লাগা মন্দ লাগা ভাবনা প্রকাশিত হয় এবং সমালোচিত সাহিত্যের বিষয়বস্তু ও ভাব এক নতুন আলোকে সমৃদ্ধ হয় তাকে সমালোচনা সাহিত্য বলা হয়। তবে সমালোচনা করলেই তা সাহিত্যে গৃহীত হতে পারে না নির্দিষ্ট কিছু সাহিত্যিক মাপকাঠি রেখে কোন সাহিত্য সমালোচনা করলে তাই সমালোচনা সাহিত্য হিসাবে মর্যাদা পেতে পারে।

সমালোচনা সাহিত্য কাকে বলে
সমালোচনা সাহিত্য


  এখানে সমালোচনা সাহিত্যের বিভিন্ন রীতি সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করা হলো - 


সমালোচনা সাহিত্যের বিভিন্ন রীতি

    সাহিত্যকে সমালোচনা করার অনেক গুলি রীতি বা পদ্ধতি আছে। কোনটি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে আবার কোন প্রবাহ বাংলা সাহিত্যে একেবারে ক্ষীণ। এখানে বেশ কয়েকটি সমালোচনা সাহিত্যের রীতি নিয়ে পরপর আলোচনা করা হলো।


 তুলনামূলক রীতি -

  বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্যের সমজাতীয় সৃষ্টি বা চরিত্রের তুলনামূলক বিচার কে তুলনামূলক রীতি বলা হয়। এই রীতিটি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের প্রচলন করেন । পরবর্তী সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলেন যেমন তার প্রাচীন সাহিত্য এবং বঙ্কিমচন্দ্রের উত্তরচরিত গ্রন্থটি তুলনামূলক রীতিতে উল্লেখযোগ্য সমালোচনা সাহিত্য


শাখাভিত্তিক পার্থক্যের রীতি -

  বিভিন্ন শ্রেণীর বৃহৎ এবং সূক্ষ্ম পার্থক্য কে কেন্দ্র করে যখন সাহিত্যের রূপ বিচার করা হয় তখন তাকে শাখাভিত্তিক পার্থক্যের রীতি বলা হয়। এই ধারার উল্লেখযোগ্য একটি সমালোচনা সাহিত্য হলো সীমারেখা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত।


ঐতিহাসিক রীতি -

  সাহিত্যকে যখন পরিবেশ তার পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান অথবা সামাজিক চেতনা রাধারে বিচার করা হয় তখন তা হয়ে ওঠে ঐতিহাসিক রীতি। পাশ্চাত্যের সাহিত্যিক টেইন এর হাত ধরে এই ধারার সূত্রপাত। বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিনয় ঘোষ এই ধারার বেশ সমৃদ্ধ ঘটিয়েছেন।


মার্কসীয় রীতি -

  সাহিত্যকে যখন ঐতিহাসিক বস্তুবাদ এর ভিত্তিতে বিচার করা হয় তখন তা হয়ে ওঠে মার্কসীয় সমালোচনা রীতি। এখানে বস্তুবাদ বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়, এটি বেশ উল্লেখযোগ্য সাহিত্য সমালোচনা পদ্ধতি


শৈলী বিশ্লেষণমূলক রীতি -

  সাহিত্যের বাইরের দিক অর্থাৎ তার গঠন বৈশিষ্ট্য কে নিয়ে যখন সমালোচনা করা হয় তা হয় সাহিত্যের শৈলী বিশ্লেষণমূলক নীতি। বিভিন্ন সাহিত্যের গাঠনিক ভঙ্গি নিয়ে এই ধরনের সাহিত্য সমালোচনা করে ওঠে। এই ধারার উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত রেখেছেন শিশিরকুমার দাশ,  অপূর্ব কুমার রায় প্রমুখ সাহিত্য সমালোচক।


মনোবৈজ্ঞানিক সমালোচনার রীতি -

  কোন সাহিত্যের বিভিন্ন চরিত্রের মনের টানাপোড়েন মনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে এই ধরনের সাহিত্য গড়ে ওঠে। বলে যেতে পারে সাহিত্য সমালোচনার এই রীতিটি ফ্রয়েডের মনঃসমীক্ষণ তত্ত্বের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। বাংলা সাহিত্যে এই ধরনের সমালোচনা সাহিত্য অনেক দুর্লভ। উজ্জল কুমার মজুমদারের নবীন রাজা এই ধরনের সমালোচনা সাহিত্য।


জীবন ভিত্তিক সমালোচনার রীতি -

  যখন কোন সাহিত্যিক কোন সাহিত্যকে তার জীবনের ভিত্তিতে সমালোচনা করেন তখন তা হয়ে ওঠে জীবনভিত্তিক সমালোচনা পদ্ধতি। যেমন কবি ঈশ্বর গুপ্ত কবিওয়ালাদের জীবনী সংগ্রহ করে বেশ বিশেষ এক জীবনী ভিত্তিক সমালোচনা সাহিত্য সৃষ্টি করেছিলেন।


এছাড়া বাংলা সাহিত্যের রূপ রীতি অনন্য প্রশ্নগুলি


Comments

Popular posts from this blog

MP 2020 History MCQ suggestions, part 6th,

সপ্ত প্রবাহের নীতি। মাধ্যমিক কমিশনের সপ্ত প্রবাহের নীতি।

Four pillars of Education - শিক্ষার চারটি স্তম্ভ | Delors Commission 1997