ভাষা ও উপভাষা কাকে বলে | ভাষা ও উপভাষার স্বরূপ আলোচনা

    ভাষা ছাড়া বাকযন্ত্র যুক্ত জীবের ভাব বিনিময় করার অনেক মাধ্যম থাকলেও ভাষায় এমন একটি মাধ্যম যার দ্বারা মানুষ একে অপরের সঙ্গে এবং সমাজবদ্ধ মানুষদের সঙ্গে খুব সহজেই ভাব বিনিময় করতে পারে। মানুষ যবে থেকে তার মনের ভাব অন্য কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চেয়েছে তবে থেকে শুরু হয়েছে ভাষা শব্দটির পথ চলা, কালে কালে এই শব্দটি বহুবিস্তৃত হয়ে উঠেছে। ভাষা আজ নিজের গণ্ডি ছাড়িয়ে জন্ম দিয়েছে উপভাষা, সমাজ ভাষা, এমনকি বিভাষা, নি - ভাষার

  আমাদের আলোচ্য ভাষা ও উপভাষা বিষয়টিকে নিচে যথাযথভাবে আলোচনা করা হলো - 




ভাষার সংজ্ঞা ও স্বরূপ

    মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে পারস্পারিক ভাব বিনিময়ের জন্য যার সাহায্যে মানুষ নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে সাধারণভাবে তাকেই আমরা ভাষা বলে জানি। যদিও অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে বা ইশারার সাহায্যে অনেক সময় মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে, ভাষাবিজ্ঞানে এইসকল অঙ্গভঙ্গি বা ইশারাকে সংকেত মনে করা হলেও এদেরকে ভাষা বলা হয় না। 



    কারণ ভাষা হল একমাত্র ধ্বনিগত প্রতীক, কোন ভঙ্গিগত প্রতীক নয়। আবার এই যে ধ্বনিগত প্রতীক তাকে আবার মানুষের বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত হওয়া চাই। ভাষার সংজ্ঞা সম্পর্কে ভাষাবিদ স্টার্টেভান্ট বলেছেন - 

    A language is a system of arbitrary vocal symbol by which members of a social group co-operate and interact. 

    অর্থাৎ ভাষা হল কতগুলি অর্থবহ ধ্বনি সমষ্টির বিধিবদ্ধ রূপ, যার সাহায্যে একটি বিশেষ সমাজের লোকেরা নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করে।




উপভাষার সংজ্ঞা ও স্বরূপ

    কালের বিবর্তনে ভাষাগুলির একটি আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা বিশেষ্য রূপ লাভ করে ভাষার এই ছোট ছোট একক গুলিকে আমরা উপভাষা বলতে পারি। মনে রাখা প্রয়োজন একটি নির্দিষ্ট ভাষা বিশিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে ছোট ছোট সীমাবদ্ধ অঞ্চলে এই ধরনের উপভাষা যুক্ত কথ্য ভাষা গড়ে ওঠে। 

   আবার যে জনসমষ্টি একই ধরনের ধ্বনি সমষ্টির বিধিবদ্ধ রূপের দ্বারা নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করে সেই সকল জনসমষ্টিকে ভাষাবিজ্ঞানীরা একটি ভাষা সম্প্রদায় বলেছেন। কিন্তু একটি ভাষা সম্প্রদায়ের ভাষার রূপ সর্বত্র একরকম নয়।

ভাষা ও উপভাষার স্বরূপ


   উপরিউক্ত এই কথার সর্বাপেক্ষা বড় উদাহরণ হল পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পাশাপাশি অবস্থিত এই সমগ্র অঞ্চলের প্রধান ভাষা বাংলা, কিন্তু এই বৃহৎ অঞ্চলের বিশিষ্ট অঞ্চল ভেদে বাংলা ভাষার বিভিন্ন রূপ গড়ে উঠেছে। এই কথ্যরূপ সমগ্র অঞ্চলে একই রকম না, আর এই পার্থক্য কেই বলা হয় উপভাষা

    A specific form of a given language, spoken in a certain locality or a geographic area, showing sufficient differences from the standard or literary form of the language, as to pronunciation, grammatical construction and idiomatic uses of words, to be considered a distinct entry, yet not sufficiently distinct from the other dialects of the language to be regarded as a different language."



    অর্থাৎ উপভাষা হলো একটি ভাষার অন্তর্গত এমন একটি বিশেষ বিশেষ রূপ যা এক একটি বিশেষ অঞ্চলের প্রচলিত। আর ওই বিশেষ রূপ গুলির সঙ্গে আদর্শ ভাষা বা সাহিত্যিক ভাষার ধ্বনিগত, রূপগত ও বাগধারাগত পার্থক্য আছে। পার্থক্য গুলি এমন সুস্পষ্ট যে ওইসব বিশেষ বিশেষ অঞ্চলের রুপ গুলিকে স্বতন্ত্র বলে ধরা যাবে। অথচ পার্থক্যটা এত বেশি হয় না যাতে ওই আঞ্চলিক ভাষা টির রুপ গুলির জন্য সেটি একটি পৃথক ভাষা হয়ে উঠতে পারে।




👉👉   উপরে ভাষা ও উপভাষা কাকে বলে এবং এদের সামান্যতম স্বরূপ বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এখানে বাংলা ব্যাকরণ বলতে আমরা যা বুঝি তা বাংলা ভাষার গঠন ভাষার বিভিন্ন ধ্বনিতাত্ত্বিক, রূপতাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে বাংলা ভাষার বিভিন্ন পরিচয় উপভাষা গুলির মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।



এছাড়া বাংলা সাহিত্যের অনন্য প্রশ্নগুলি 

Comments

Popular posts from this blog

চর্যাপদ প্রশ্ন উত্তর - বাংলা সাজেশন - বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে চর্যাপদ - pdf

Learning, শিখন। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞানের প্রথম পার্ট।

রবীন্দ্রনাথের কর্তার ভূত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন